এনিমে ও মাঙ্গা সমাচার। এনিমে ফান ফ্যাক্টস

জনপ্রিয় জাপানিজ এনিমে তো আমরা সবাই দেখি। আজকের এই পোস্টে চলুন তাহলে জেনে নেই সেরা কিছু এনিমে ও মাঙ্গা এর ফান ফ্যাক্টস!

এনিমে হল এনিমেশন এর ছোট ফরম যা দ্বারা জাপানের এনিমেশনকে বুঝায়। এটি শুরু হয় ১৯১৭ সালে জাপানিজ আর্টিস্ট শিমকাওয়া অতেন, জুন ইচি কৌচি এবং সেইতারো কিতায়ামা এর মাধ্যমে। আজকে এই পোস্টে আমরা কিছু এনিমে ফান ফ্যাক্টস দেখব। সর্বপ্রথম এনিমে নিয়ে অনেক তর্ক বিতর্ক থাকলেও, আমরা যদি আগেকার একটি দেখি তাহলে দেখব যে, এটি দুই মিনিটের একটি ক্লিপ ছিল যেখানে আমরা দেখতে পাই একজন সামুরাই তার নতুন তরবারি টি চেক করে দেখছে। এনিমে এর কোন প্লোরাল ফরম নেই। তাই এটা Anime not Animes. জানলে অবাক হবেন যে, জাপানে প্রতি সপ্তায় প্রায় ৪০টির মত নতুন এনিমে টিভিতে আসে।

20230405 220442

Best Anime Fun Facts in Bangla

এটি মনে হয় আপনারা জানেন যে, জাপানে টয়লেট পেপারের চাইতে বেশি মাঙ্গা প্রিন্ট করতে কাগজ বেশি খরচ হয়। জাপানের সবচাইতে জনপ্রিয় মাঙ্গা লেখক হলেন তেজুকা অসামু। এছাড়া এনিমেতে ব্যাবহার করা বেশিরভাগ জনপ্রিয় মিউজিক গুলো Ghost in the Shell এর উপর ভিত্তি করে তৈরি। জাপানে মাঙ্গা মানে হল Whimsical Pictures যার মানে হল “অদ্ভুত কল্পনাপূর্ন চিত্র”।

জাপানে যখন কারো কোন মাঙ্গা পড়া শেষ হয়ে যায় তখন সে ওই মাঙ্গা টাকে কোন টেবিল বা বেঞ্চ এ রেখে যায় যেন অন্য কেও এটা নিয়ে পড়তে পারে। এগুলো তো সাধারন কিছু মজার তথ্য ছিল এনিমে নিয়ে।

সেরা এনিমে ফান ফ্যাক্টস:

এই এনিমে ফ্যাক্ট গুলো আমরা বিভিন্ন সোর্স থেকে সংগ্রহ করেছি। আপনারা চাইলে আমাদের ফেসবুক পেজে ভিজিট করে দেখতে পারেন। সেখানে আরো অনেক এনিমে ফান ফ্যাক্টস ডেইলি পোস্ট করা হয়!

1. সবচাইতে বেশি ভয়েস পাওয়া চরিত্র:

Eucliwood Hellscythe হল সবচাইতে বেশি ভয়েস পাওয়া চরিত্র। তাকে মোট ২২ জন আলাদা ব্যাক্তি ভয়েস দিয়েছেন!

2. সবচাইতে লম্বা এনিমে সিরিজ:

অনেকে হয়ত ভাবেন যে One Piece হলো সবচাইতে লম্বা এনিমে সিরিজ কিন্তু তা না। Sazae-San হলো সবচাইতে লম্বা এনিমে সিরিজ যা ১৯৬৯ সাল থেকে চলে আসছে এবং এখনো চলছে।এটাতে ৭৫০০ এর বেশি এপিসোড রয়েছে এবং প্রায় ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে এটি টিভিতে দেখানো হচ্ছে।

3. স্পেস থেকে ভয়েস দেওয়া:

এটি খুবই ইন্টারেস্টিং স্টোরি। স্পেস এডভেঞ্চার নিয়ে একটি এনিমে যার নাম Space Brothers হল প্রথম এনিমে যাতে পৃথিবীর বাইরে থেকে ভয়েস দেওয়া হয়। আকিহিকো হোশিদেকে আইএসএস-এ থাকার সময়, অ্যানিমে টেলিভিশন সিরিজ, স্পেস ব্রাদার্সের ৩১তম পর্বে একটি ক্যামিও উপস্থিতির জন্য মহাকাশে থেকে প্রথম ভয়েস অ্যাক্টিং পারফরম্যান্স সফলভাবে রেকর্ড করেন। যা ৪ নভেম্বর, ২০১২ এ সম্প্রচারিত হয়।

4. এনিমেশন এর রাজা হলো এনিমে:

পুরো পৃথিবীর যতগুলো এনিমেশন কনটেন্ট আছে তার ৬০% হল জাপানের এনিমে। কার্টুন ও না ডিজনির এনিমেশন ও না । আর একটি এনিমে এপিসোড তৈরি করতে $100,000 – $200,000 খরচ হতে পারে। সবচাইতে জনপ্রিয়: Pokémon Go হলো গুগলের মধ্যে সবচাইতে জনপ্রিয় ট্রেন্ড এবং Pokémon হল সবচাইতে জনপ্রিয় সিরিজ।

5. ব্লিচ মাঙ্গা ক্যান্সেল হাওয়া থেকে বাঁচিয়েছিলেন আকিরা তরিয়ামা।

তিতে কুবো এর প্রথম মাঙ্গা “জম্বি পাউডার” ২৭ চ্যাপ্টার পাবলিশ হবার পর যখন প্রথম বাতিল হয়ে যায় তখন সে ব্লিচ এর খসরা সৌনেন জাম্পকে জমা দিয়েছিল। কিন্তু ব্লিচ এর কাহিনীকে YuYu Hakusho এর সাথে অনেক মিল দেখে এটাকে রিজেক্ট করে দেয় এডিটর টিম। এবং তিনি কি মাঙ্গা ইন্ডাস্ট্রি তে বিলং করে কি না এরকম অপমান ও করা হয়। এর পর ডিপ্রেশনে চলে যায় তিতে কুবো।

তখন আকিরা তরিয়ামা ব্লিচ মাঙ্গা এর পিচ দেখে তিতে কুবো কে ব্লিচ মাঙ্গা চালিয়ে যাওয়ার জন্য চিঠি লিখেন এবং পরবর্তীতে দ্বিতীয় বার চেষ্টার পর সৌনেন জাম্প ব্লিচ মাঙ্গা কে সিরিয়ালাইজ করা শুরু করে। কিন্তু এর পরেও একসময় ব্লিচ কে তারা ক্যান্সেল করার জন্য প্রিপারেশন নিলে আকিরা তরিয়ামা আলাদা করে তিতে কুবো এর ব্লিচ মাঙ্গা কে রেকমেন্ডেশন করে এডিটর বরাবর একটি চিঠি দেন এবং পরবর্তীতে আর ব্লিচ মাঙ্গা ক্যান্সেল করা হয় নি।

6. চিৎকার থেকে জনপ্রিয় রিংটোন:

২০১৫ সালে আর্মিন (AOT) এর চিৎকার সবচাইতে জনপ্রিয় রিংটোন হিসেবে #1 হিসেবে স্থান দখল করে।

7. ডেথ নোট আরেক সিরিজের কপি:

একটি মাঙ্গা যার নাম The Miraculous Notebook of Fushigi na Techou যা ১৯৭৩ সালে রিলিজ হয় এবং এটাতে দেখানো হয় যে একজন মধ্য বয়স্ক লোক যে একটি নোট পায় যার মধ্যে সে যার নাম লিখে সেই মারা যায়। অন্যদিকে ডেথ নোট রিলিজ হয় ২০০৩ সালে। যদিও এটি কনফার্ম না যে লেখক কি ওটা থেকেই বানিয়েছেন নাকি কুইন্সিডেন্স ছিল।

8. অ্যাটাক অন টাইটান মার্ভেল কমিক্স এ?

আপনারা হয়ত অনেকেই জানেন না বর্তমানে হাইপে থাকা এনিমে Attack on Titan এবং মার্ভেল কমিক এর মধ্যে ক্রসওভার আছে। যার নাম “Attack On Avengers“। এটি ৮ পাতার একটি ছোট কমিক যা ২০১৪ সালে রিলিজ হয়।যেখানে দেখা যায় যে টাইটান রা ম্যানহাটান শহরে আক্রমণ করে তখন এভেনজার্স রা ওখানের মানুষকে বাঁচাতে ছুটে আসে এবং টাইটান দের সাথে ফাইট করে। শেষের দিকে দেখা যায় এভেঞ্জার্স দের সাহায্য করার জন্য “গার্ডিয়ান অফ দা গ্যালাক্সি” টিম আসে।

9. এনিমের মধ্যে ভবিষ্যত:

JoJo’s Bizarre Adventure এর একটি চরিত্র Boingo. সে একবার তার ভবিষ্যত কি হতে পারে সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করে এবং আমেরিকার 9/11 এর পূর্বাভাস করে। এটি ওই ঘটনার ১১ বছর আগের কাহিনী। লেখক যখন এটা পরে জানতে পারে তিনিও বিস্মিত হয়ে পড়েন।

10. Orange Hokage:

Naruto যখন হোকাগে হয় তখন যে নিজেকে Orange Hokage হিসেবে পরিচয় দেয়। ফ্যানরা মনে করত যে Naruto এর কমলা রঙের পোশাক এর কারণেই হয়ত এটা বলত কিন্তু তা না। এটার দ্বারা তার বাবা মাকে রেফার করা হয়। তার মা যার চুলের রং ছিল লাল এবং তার বাবা যার চুলের রঙ ছিল হলুদ। যারা আর্ট এর ক্লাস নিয়েছেন তারা হয়ত জানেন যে লাল এবং হলুদ মিললে কমলা রং তৈরি হয়। একইসাথে ফ্যানরা সবসময় ভাবত যে সেই উজুমাকি ক্ল্যান এর লাস্ট মেম্বার কিন্তু তা ভুল। আরো অনেকে এখনো জীবিত আছে ।

11. চীনে বেশিরভাগ এনিমে ব্যান

সবচেয়ে অবাক করা ঘটনা হলো – চীনে ডেথ নোট কে ব্যান করে দেওয়া হয় কারণ এটি দেখার পর শিশুরা ডেথ নোট নুুটবুক কিনা শুরু করে এবং তারা যাদের অপছন্দ করত তাদের নাম লিখা শুরু করে যেন তারা মারা যায়। এছাড়াও চীনে আরো বড় বড় এনিমে যেমন Sword Art Online, Assassination Classroom, Tokyo Ghoul, Black Butler এবং Attack On Titan কে ব্যান করে দেওয়া হয় কারণ এতে এমন কিছু সিন আছে যা মানুষের নৈতিকতার বিরুদ্ধে যায়।

তবে এত সব থাকার পরেও, জাপানে যারা নিজেদের Otaku এবং Weeb বলে দাবি করে তারা তাদের সোসাইটির বদ নজরে পড়ে। অন্যদিকে জাপানে শোনা মিউজিক গুলোর মধ্যে ৮৫% মিউজিক গুলো কোন না কোন এনিমের ওপেনিং বা এন্ডিং।

তো এই ছিল আজকের মত। আমাদের এই পোস্টটি রেগুলার আপডেট হতে থাকবে। তাই আপনি যদি কোনো মজাদার এনিমে বা মাঙ্গা ফান ফ্যাক্ট জানেন তাহলে কমেন্টে আমাদের জানাতে পারেন। আর এই পোস্টটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না!

লিখা – রিদুয়ান চৌধুরী নোমান / Peak Fiction

Continue Reading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *